side effects of chemotherapy during cancer treatment
কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, প্রতিকারের উপায় জানালেন বিশিষ্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ
ক্যান্সার চিকিত্সার মধ্যে কেমোথেরাপি অন্যতম এবং কার্যকরী। কেমোথেরাপিতে ওষুধের মাধ্যমে দ্রুত বিভাজিত ক্যান্সার কোষকে দ্রুত ধ্বংস করা হয়। কেমোথেরাপি রক্তের প্রবাহে দেওয়া হয়, ফলে তা রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং শরীরের অন্যান্য অংশে ক্যান্সারের বিকাশ হতে দেয় না।
অন্যান্য চিকিৎসার মতো, কেমোথেরাপির একাধিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, যা ক্যান্সারের ধরন, অবস্থান, ওষুধের ডোজ এবং সাধারণ স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। কলকাতার বিশিষ্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডঃ অর্ঘ্য বসু জানালেন কেমোথেরাপির বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও তার প্রতিকার সম্পর্কে।
১. বমি/বমি বমি ভাব
কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে বমি বা বমি বমি ভাব হতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে পারেন। বমি বমি ভাব এবং বমির সমস্যা এড়াতে একবারে বেশি খাবার না খেয়ে সারাদিনে অল্প অল্প করে খাবার খান।
২. স্বাদ পরিবর্তন
কেমোথেরাপি অনেক সময় স্বাদকে প্রভাবিত করতে পারে। এক্ষেত্রে ভিন্ন স্বাদ পেতে রেড মিট খেতে পারেন। এছাড়া পোল্ট্রির মাংস, হালকা-গন্ধযুক্ত মাছ বা দুগ্ধজাত পণ্য খেতে পারেন।
৩. ক্লান্তি
ক্যান্সার রোগীরা প্রায়শই ক্লান্ত বা শক্তির অভাব বোধ করেন। এর বিভিন্ন কারণের মধ্যে রয়েছে কেমোথেরাপি, কম ব্লাড কাউন্ট, অনিদ্রা, ব্যথা, মানসিক চাপ, ক্ষুধা হ্রাস ইত্যাদি। এর জন্য দিনের বেলা কিছুক্ষণ ঘুমাতে পারেন। পারলে শরীরে শক্তি যোগাবার জন্য কিছুক্ষণ হাঁটতেও পারেন।
৪. কোষ্ঠকাঠিন্য
কেমোথেরাপি, ব্যথার ওষুধ, বমি বমি ভাব কাটানোর ওষুধ বা আপনার খাওয়া-দাওয়ার পরিবর্তনের ফলে অনেকসময় কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এই ভোগান্তি নিয়ন্ত্রণে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে পারেন। এছাড়া শারীরিকভাবেও সক্রিয় থাকতে হবে।
৫. চুল পড়া
কিছুক্ষেত্রে কেমোথেরাপি শরীরের বিভিন্ন অংশের চুলের ওপর প্রভাব ফেলে, যেমন ভ্রু, চোখের পাতা এবং মাথার চুল। তবে এটি অস্থায়ী সমস্যা। এক্ষেত্রে মাথায় স্কার্ফ, পরচুলা, টুপি ব্যবহার করতে পারেন। চুল উঠে যাওয়ার পর মাথার ত্বকের যত্ন নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। টুপি বা স্কার্ফ ব্যবহার না করলে, মাথার ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
৬. দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা
ক্যান্সার এবং এর একাধিক চিকিৎসা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে। যেহেতু কেমোথেরাপি সুস্থ ইমিউন কোষগুলিকেও মেরে ফেলে, সেক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির শরীরে সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়ে যেতে পারে। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম থাকে না, তাই সংক্রমণও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। বিশিষ্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডঃ অর্ঘ্য বসুর মতানুসারে, কেমোথেরাপি চলাকালীন স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, ঘন ঘন হাত ধুতে হবে, অসুস্থ ব্যক্তিদের এড়িয়ে চলতে হবে।