Colon cancer symptoms and treatment methods
ক্যানসার এমন একটি অসুখ আমাদের দেহের বিভিন্ন অঙ্গে হতে পারে। তবে যখন আমাদের বৃহদন্ত্র ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে তখন আমরা তাকে বলি ‘কোলন ক্যানসার’। অন্যান্য ক্যানসারের তুলনায় ‘কোলন ক্যানসার’-এ আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম।তবে মনে রাখতে হবে ‘কোলন ক্যানসার’-এ আক্রান্তদের মধ্যে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের সংখ্যাই বেশি থাকে। ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডাঃ অর্ঘ্য বসু জানিয়েছেন, অনেক সময় ‘কোলন ক্যানসার’-ধরা পরার সময় সেটা ফুসফুস বা লিভার পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ফুসফুস বা লিভারের যে অংশে ক্যানসার ছড়িয়েছে সেই অংশটা অস্ত্রোপ্রচারের মাধ্যমে বাদ দিলেও ক্যানসার রোগীকে বহু বছর পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখা যায়।
‘কোলন ক্যানসার’ হওয়ার সম্ভবনা :-
‘কোলন ক্যানসার’ সাধারণত পুরুষদের মধ্যেই বেশি দেখা দেয়। বিশেষ করে যাদের বয়স ৬০ বছর কিংবা তার বেশি তাদের মধ্যেই এই ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম থাকে। যদিও মহিলাদের ক্যানসার হয় তাহলে সেটা ৭০ বছর হয়ে যাওয়ার পর।
‘কোলন ক্যানসার’ দেখা দেওয়ার কারণ :-
‘কোলন ক্যানসার’ দেখা দেওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। তবে এই বিষয়ে ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডাঃ অর্ঘ্য বসু জানিয়েছেন, খাদ্যে যদি ফাস্ট ফুডের পরিমাণ বেশি হয়, তেল, ঘি, মশলার পরিমাণ বেশি হয় এবং যদি শাক-সবজির পরিমান বেশি হয় বা রোগীর যদি কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে, আলসার ইত্যাদি সমস্যা থাকে তার থেকে ‘কোলন ক্যানসার’ হতে পারে। এছাড়াও ধূমপান, মদ্যপান ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস মেনে চললেও আমদের ‘কোলন ক্যানসার’হতে পারে।
‘কোলন ক্যানসার’-এর উপসর্গ :-
‘কোলন ক্যানসার’-এর কয়েকটা বিশেষ উপসর্গ রয়েছে। বিশেষজ্ঞ ডাঃ অর্ঘ্য বসুর মতে, ‘কোলন ক্যানসার’ হলে দেখা যাবে মল ত্যাগ করার সময় রক্তপাত হবে। কিন্তু কোনও ব্যথা হবে না। এছাড়াও মলের রং হবে কালো। রোগীর খিদে কমে যাবে, ওজন কমে যাবে। দীর্ঘদিন ধরে রোগীর পেটে ব্যথা হবে। এছাড়াও অনেক সময় রোগীর খাদ্যনালীর মুখ আটকে যায় যার ফলে রোগীর পেট ফুলে যাবে, বমি হবে, পেটে জল জমে যাবে এবং বমির মাধ্যমে মল বেরিয়ে আসে। এই অবস্থাকে বলে ‘ইনটেস্টিনাল অবস্ট্রাকশন’। তবে এই ধরনের সমস্যার হওয়ার আগেই কোন অনকোলজিস্ট বা ক্যানসার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া।
‘কোলন ক্যানসার’-এর চিকিৎসা :-
ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডাঃ অর্ঘ্য বসু জানিয়েছেন, ‘কোলন ক্যানসার’-এর চিকিৎসার জন্য ‘ডি৩ কোলনিক রিসেকশন সার্জারি’ করা হয়। অস্ত্রোপ্রচারের এই পদ্ধতির মাধ্যমে ক্যানসার সম্পূর্ণ গোড়া থেকে নির্মূল করে দেওয়া সম্ভব। ‘কোলন ক্যানসার’-এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক সময় অস্ত্রোপ্রচারের আগেও কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। এর ফলে ক্যানসারের বিস্তার কমে যায়। তবে যদি ‘ইনটেস্টিনাল অবস্ট্রাকশন’ হয়ে যায় তখন প্রথমেই অস্ত্রোপ্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর একজন ‘কোলন ক্যানসার’ আক্রান্তকে অস্ত্রোপ্রচারের পর বিভিন্ন ধরনের কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। তবে কেমোথেরাপিতে কাজ না করলে অবশ্যই ইমিউনোথেরাপি ব্যবহার করা হয়। এই চিকিৎসা পদ্ধতির ব্যবহারে একজন ‘কোলন ক্যানসার’ রোগীকে দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।